প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১, ২০২৫, ১২:২৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ২১, ২০২৫, ১২:০২ এ.এম
 সংগীত, নৃত্য, সংলাপে সাজপোশাকের ব্যতিক্রমী পরিবেশনা 
  
         
  
        
    
    
আয়োজনটি ছিল পোশাক ও রূপসজ্জার। সংগীত, নৃত্য, অভিনয়, আবৃত্তির নান্দনিক পরিবেশনায় তা মনোজ্ঞভাবে উপস্থাপন করা হলো। শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগের এই আয়োজন ছিল ধানমন্ডির ছায়ানট মিলনায়তনে।
সোমবার বিকেলে ‘এসো সুতোর কাব্য গাঁথি ধ্রুপদি ফোঁড়ে’ নামের এই অনুষ্ঠান শুরু হয় কাজী নজরুল ইসলামের ‘ধূমকেতু’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতার কিছু অংশ অভিনয়ের আঙ্গিকে পরিবেশনা। তারপর জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘হঠাৎ নীরার জন্য’ কবিতার আবৃত্তি। নজরুলসংগীত ‘আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন’ গানের সঙ্গে ছিল ধ্রুপদি নৃত্য।
 
 
 
 
পরিবেশনা একের পর এক এভাবেই এগিয়েছে। তবে এর প্রধান আকর্ষণ ছিল শিল্পীরা মঞ্চে এসেছিলেন বিশেষ প্রযত্নে তৈরি করা পোশাক ও সাজে। বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য কিছু চরিত্র উপস্থাপন করা হয়েছিল অনুষ্ঠানে। তাঁদের মাধ্যমে সেকালের পোশাক ও সাজসজ্জার ধরন তুলে ধরা হয়েছিল প্রত্যেক পরিবেশনায়। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’র অমিত-লাবণ্য, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পরিণীতা’ উপন্যাসে শেখর-ললিতা, সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রের অপু-অপর্ণার একটি দৃশ্য—এমন বেশ কিছু চরিত্র, টুকরা টুকরা অভিনয়, আবৃত্তি বেশ ভিন্নতা এনেছিল অনুষ্ঠানে। মাঝেমধ্যে ছিল ‘মেঘের ডমরু ঘন ঘন বাজে’, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’ এই গানগুলোর সঙ্গে দ্বৈত নৃত্য। একক গানও ছিল দুটি—রবীন্দ্রনাথের ‘দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার’ ও নজরুলের ‘নামাজি তোর নামাজ’।
[caption id="attachment_1624" align="alignnone" width="300"]
 সো সুতোর কাব্য গাঁথি ধ্রুপদি ফোঁড়ে’ অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তির একটি দৃশ্য।[/caption]
 
 
 
 
বেশ গোছানো, পরিপাটি আয়োজন। শুরু থেকে শেষ হলো একটানা পরিবেশনায়। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধান করেছেন ফ্যাশন–গবেষক শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগের অধ্যাপক নুসরাত জাহান। প্রথম আলোকে তিনি বললেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রায় ছয় মাস গবেষণা করে তাঁরা এই অনুষ্ঠানের জন্য পোশাক পরিকল্পনা ও ডিজাইন করেছেন। ফ্যাশন ক্রমে পরিবর্তন হয়। অতীতের সঙ্গে বর্তমানের একটা পরম্পরা যেন শিক্ষার্থীরা হাতে–কলমে শিখতে পারে, দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়, সে জন্য তাদের নিয়ে এই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগের সঙ্গে নৃত্য ও কলা অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও পরিবেশনায় অংশ নিয়েছেন। যাঁরা মঞ্চে যে বিষয়ে পরিবেশন করেছেন, তাঁরা সেই চরিত্র অনুসারে পোশাক ও সাজসজ্জা করেছেন। আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে দর্শক হিসেবে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও অনেকে সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের বিশেষ বিশেষ চরিত্রের সাজপোশাকে সজ্জিত হয়ে এসেছিলেন। ফলে মঞ্চের পরিবেশনা আর দর্শকদের উপস্থিতি মিলিয়ে বেশ অন্য রকম একটা আবহের সৃষ্টি হয়েছিল অনুষ্ঠানে।
[caption id="attachment_1625" align="alignnone" width="300"]
 ‘এসো সুতোর কাব্য গাঁথি ধ্রুপদি ফোঁড়ে’ অনুষ্ঠানে অভিনয়ে দুই শিক্ষার্থী।[/caption]
 
 
 
 
 
শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শিল্পী মোস্তাফিজুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইমামুল কবির শান্ত একটি নতুন ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়তে চেষ্টা করেছিলেন। সেই সূত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়েই দেশে প্রথম ফ্যাশন ডিজাইন বিভাগে খোলা হয়েছিল। এখান থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশের পোশাকশিল্পে ভালো কাজ করছেন। তিনি তাঁদের কাজে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান।
আলোচনায় আরও অংশ নেন অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, অভিনয়শিল্পী হামিদুর রহমান ও সাহিত্যিক মজিদ মাহমুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজওয়ানা ফেরদৌস।
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
    
        
             © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত