যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ আর নেই।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ভোররাত ৩টার দিকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
সুলতান মাহমুদ শরীফ ছিলেন প্রবাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার অগ্রদূত। ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ছিল ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয়। তিনি ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ছড়িয়ে দেওয়ার একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী।
জানাজার নামাজ ও শ্রদ্ধা নিবেদনঃ
সুলতান মাহমুদ শরীফের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল রবিবার, ২৪ আগস্ট লন্ডনের ব্রিকলেইন জামে মসজিদে, বাদ জোহর (দুপুর ১:৩০ মিনিটে)।
এর আগে, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ রাখা হবে আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে, ২৪ আগস্ট, রবিবার দুপুর ১২টা থেকে।
ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক অবদানঃ সুলতান মাহমুদ শরীফের জন্ম ১৯৪১ সালের ২৬ জানুয়ারি, বরিশাল জেলার কতোয়ালী থানার চানপুরা ইউনিয়নের সারুখালী গ্রামে।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার পর তিনি প্রবাসে পাড়ি জমান এবং যুক্তরাজ্যে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কাজ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যান।
তাঁর নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী রাজনীতির ভিত মজবুত হয়। বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন, মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে অনুষ্ঠান আয়োজন, এবং ব্রিটিশ মূলধারার রাজনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত করতে তাঁর অবদান ছিল অনন্য।
সুলতান মাহমুদ শরীফের মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ দেশের রাজনৈতিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন প্রবাসী সংগঠন তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, ছিলেন একজন আদর্শবান মানুষ, যিনি প্রবাসে থেকেও দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতি হারালো একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিককে।